মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আসলে কি ? এবং কারা সেই চেতনা সত্যিই ধারণ করছে ??এন.সি-১৭

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আসলে কি ? এবং কারা সেই চেতনা সত্যিই ধারণ করছে ??
সম্প্রতি ডাকসু’র ভিপিকে নুরুর উপর হামলা নিয়ে অভিযুক্ত হয়েছে ছাত্রলীগের কিছু নেতা ও তাদের সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা মঞ্চ নামক একটি সংগঠন। তাদের দাবী, তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকেই বাস্তবায়ন করেছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার যারা বিরোধী তাদেরকেই তারা দমন করছে।
ঘটনা হইলো, অনেকেই নিজেদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাধারী বলতে পারে কিংবা অন্যদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে বলতে পারে। কিন্তু কথা হইলো- মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আসলে কি ছিলো, কারা আসলেই সেই বর্তমানে ধারণ করছে বা বিরুদ্ধচারণ করছে সেটা আমরা নতুন প্রজন্ম বুঝবো কিভাবে ?
ইতিহাস দিয়ে যদি পর্যালোচনা করা হয়, তবে আসুন হিসেবটা একটু মিলিয়ে নেই। ইতিহাস বলছে-
ঐ সময় একটি গোষ্ঠী বা জাতি (পাঞ্জাবি) দেশের (পাকিস্তানের) ক্ষমতা অন্যায়ভাবে কুক্ষিগত করে রাখতে চাইতো। ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে তারা অন্য জাতি গোষ্ঠীর (বাঙালী, বেলুচি, পশতু, সিন্ধি) উপর প্রয়োজনে দমন নিপীড়ন চালাতো। পাঞ্জাবীদের কারণে অন্য জাতি গোষ্ঠীগুলোকে ন্যায্য অধিকার থেকেও বঞ্চিত হতো। পাঞ্জাবিদের এই অত্যাচার, দমন, নিপীড়ন ও ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখার কারণে অন্য জাতি গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে ক্ষোভ দানা বাধতে থাকে, অনেকে প্রতিবাদ গড়তে থাকে। ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখা পাঞ্জাবিদের বিরুদ্ধে আন্দোলনে এক সময় বাঙালী জাতি গোষ্ঠী সফল হয় এবং ঘটনাক্রমে তাদের ভূমিকে পৃথক করে তৈরী করে স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশ।
আপনি যদি সেই ইতিহাসটা ঠিক বর্তমানে সময়ে এনে সেট করেন, তবে-
১) বর্তমান বাংলাদেশে কারা পাঞ্জাবীদের মত ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখতে চায় ?
২) বর্তমান বাংলাদেশে পাঞ্জাবীদের মত নিজেদের অন্যায় আধিপত্য বজায় রাখতে কারা অন্য নাগরিকদের উপর দমন নিপীড়ন চালায় ?
৩) বর্তমান বাংলাদেশে পাঞ্জাবীদের মত কারা ক্ষমতাকে পূজি করে আর্থিক লাভবান হয় এবং অন্যদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করে ?
৪) বর্তমান বাংলাদেশে ঐ সময়ের মত ক্ষমতাসীনদের অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে কারা সাধারণ জনতার কাতারে বাঙালী জাতির মত প্রতিবাদ বিক্ষোভ করছে ?
বর্তমান বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যদি এই চারটা প্রশ্নের উত্তর যদি দেন,
তবে আপনি বুঝবেন, কারা আসলে বর্তমানে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষে এবং কারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে, নিজে নিজেকে ভালো-মন্দ দাবী করার এখানে কোন সুযোগ নাই।